আমাদের চুলের প্রধান শত্রু হলো খুশকি। অনেক মানুষ ভুলবশত মনে করেন মাথার ত্বকের শুষ্কতা বা অপরিচ্ছন্নতার জন্য খুসকি হয়। গবেষকরা এখন খুসকিকে একটি চিকিৎসাধীন অসুখ মনে করেন,পৃথিবীর প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের মধ্যে অর্ধেকের ও বেশী মানুষের মধ্যে খুসকি বিদ্যমান।
মাথার ত্বকের পুরানো মৃত কোষই হলো খুশকি। খুসকি মাথার ত্বকে হওয়া একটি দীর্ঘমেয়াদী অসুখ। যাহা সাধারণত ত্বকের শুষ্কতা, চুলকানী এবং অতিরিক্ত তৈলাক্তভাবের জন্য মাথার চামড়া স্তরে স্তরে উঠে আসে। খুসকি পিটোরোজফোরাম ওভেল (পি.ওভেল) নামক ক্ষুদ্র জীবাণুর উপস্থিতিতে হয়ে থাকে । ইহা মেলাসেজিয়া নামক ইষ্ট জাতীয় এক ধরনের ছত্রাক আক্রান্ত ত্বকের অসুখ ।
খুসকির পাশাপাশি মাথার ত্বকের আর একটি প্রধান সমস্যা হলো স্ক্যাল্প সোরিয়াসিস। স্ক্যাল্প সোরিয়াসিসের ফলে ত্বকের কোষ বিভাজন দ্রুত বৃদ্ধি পায় ফলে ত্বকের উপর বাড়তি কোষ জমা হয়। এটির আক্রান্ত স্থানে ত্বক মাছের আঁশ এর মতো খসখসে হয় ও লালচে ভাব দেখা যায় এবং অতিরিক্ত চুলকানির ফলে অনেক সময় ত্বক ফেটে রক্ত বের হতে পারে।
সিবোরিক ডার্মাটাইটিসও এক ধরনের সাধারণ চর্মরোগ, যা সাধারণত মাথার ত্বককে ক্ষতিগ্রস্ত করে। সিবোরিক ডার্মাটাইটিসের ক্ষেত্রে মাথার ত্বকে দাঁগ/ ক্ষত, ফুসকুড়ি দেখা যায় যেটা কখনো কখনো তেলতেলে হলুদ অথবা সাদা আঁশযুক্ত আবরণ দিয়ে ঢাকা থাকে। এই রোগের কারণে আক্রান্ত স্থান খসখসে হয়ে যায় ও খুশকি দেখা দেয়।
শীতকালে আমাদের ত্বক অধিক শুস্ক থাকায় এই ধরণের রোগ আরো বেড়ে যায়।
উপাদান সমূহ:-
বেসনঃ ছোলার ডাল গুড়ো করে বেসন তৈরী করা হয়। বিউটি পার্লার ,রূপচর্চা ও মাথার শ্যাম্পু হিসেবে প্রধানত এটি ব্যবহার করা হয়।এতে থাকে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, কপার, জিংক, ম্যাগনেসিয়াম, এ্যামিনো এসিড, এসেনশিয়াল ফ্যার্টি এসিড ও পটাশিয়াম যা মাথার ত্বকের মৃত কোষ দূর করে।
মেথিঃ এটি তিক্ত স্বাদ যুক্ত। প্রধানত এটি মসলা ও পথ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়।এতে থাকা ফ্যার্টি এসিড, এ্যামিনো এসিড, ভিটামিন বি, মিনারেল ও প্রোটিন ক্ষতপূরক, এন্টি—ফাংগাল, ত্বক পরিষ্কারক, ব্যাথা নাশক হিসেবে কাজ করে।
রাই—সরিষাঃ এটি ব্যাকটেরিয়া ও ছএাক নাশক, প্রদাহ বিরোধি। এই জন্য এটি খুশকি দূর করে, চুলপড়া প্রতিরোধ করে এবং চুল বৃদ্ধি করে।
খেতমী বীজঃ এতে থাকা ফ্য¬াবোনয়েড ও পলিস্যাকারাইড এন্টি—ফাংগাল, এন্টি—ইনফা¬মেটরী হিসেবে কাজ করে এবং মাথা পরিষ্কার রাখে।
গমের ভুসিঃ এতে আছে ভিটামিন—ই, প্রয়োজনীয় ফ্যার্টি এসিড যা হেয়ার কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে।
মাত্রা এবং ব্যবহার বিধি –
প্রাথমিক পর্যায়ে কোনাজ শ্যাম্পু সপ্তাহে ২ বার ব্যবহার করতে হয় ২ থেকে ৪ সপ্তাহ পর্যন্ত। প্রথমে চুল ভিজিয়ে হাতের তালুতে সামান্য পরিমাণ শ্যাম্পু ঢেলে আলতো ভাবে মাথার ত্বকের সর্বত্র লাগাতে হবে। সাধারণ শ্যাম্পু দিয়ে মাথা ধোয়ার পরও কোনাজ শ্যাম্পু ব্যবহার করা যাবে। শ্যাম্পু যাতে মাথার ত্বকে প্রবেশ করতে পারে সেজন্য ৩-৫ মিনিট সময় ধরে আলতোভাবে ঘষতে হবে, এরপর ধুয়ে ফেলতে হবে।
কোনাজ শ্যাম্পু সপ্তাহে ১-২ বার ব্যবহার করতে হবে যেন খুশকি পুনরায় ফিরে আসতে না পারে। চিকিৎসার সময় কোনাজ শ্যাম্পুর সাথে অন্যান্য সাধারন শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার ব্যবহার করা যেতে পারে। অথবা চিকিৎসক এর পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহার করতে হবে।
বিশেষ কথা –
১. মাথার ত্বকের জ্বালাপোড়া সংক্রান্ত সমস্যায় ব্যবহারযোগ্য একটি অসাধারণ শ্যাম্পু ।
২. ত্বককে ছত্রাক আক্রমণ হতে প্রতিরোধ করে খুশকিজনিত সমস্যা দূর করে।
৩. ছত্রাকীয় সংক্রমণের চিকিৎসায় বিশেষভাবে কার্যকরী ,যেমন সেবোরেইক ডারমাটাইটিস (খুশকির আর একটি ধরন)
৪. এই শ্যাম্পু দ্বারা খুশকির চিকিৎসা চলাকালীন সময়ে অন্যান্য সাধারন শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করা যায়।
Reviews
There are no reviews yet.